কক্সবাজার বিমানবন্দরের 'আন্তর্জাতিক' মর্যাদা আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) এ নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।

এর আগে, গত ১৩ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়।

যোগাযোগ করা হলে বেবিচকের এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সদস্য এয়ার কমডোর নূর-ই-আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত মঙ্গলবার বেবিচক চেয়ারম্যান মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে কক্সবাজার নিয়ে কী করব—তা জানতে চেয়েছিলাম। বলেছিলাম আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত।'

এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন ও সচিব নাসরিন জাহান কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শনে যান বলে জানান তিনি।

এয়ার কমডোর নূর-ই-আলম বলেন, 'আমি সচিব ও উপদেষ্টাকে বিষয়টি জানালে উপদেষ্টা আমাকে বলেন আপাতত এটি (আন্তর্জাতিক মর্যাদা) স্থগিত রাখতে। তিনি বলেছেন, রোববার এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত জানানো হবে।'

বেবিচকের এই শীর্ষ কর্মকর্তা আরও জানান, 'আমরা এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। তবে তারা জানিয়েছেন যে, রোববার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আপাতত আমাদের বলা হয়েছে কার্যক্রম স্থগিত রাখতে।'

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর বিমানের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, তারা এ মাসের শেষদিকে সীমিত আকারে কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরু করবেন।

বর্তমানে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল করে।

কক্সবাজারের প্রায় ১১ হাজার বর্গফুট আয়তনের নতুন টার্মিনাল ভবনের নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি।

বেবিচক সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে পরিচালনার জন্য কক্সবাজারে প্রয়োজনীয় সব সুবিধা এখনো প্রস্তুত হয়নি। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি এয়ারলাইনস কক্সবাজারে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা জানায়নি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছিলেন যে, তারা চলতি মাসের শেষ দিকে ঢাকা হয়ে কলকাতা-কক্সবাজার রুটে সীমিত আকারে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা করছেন।

২০২১ সালে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এর লক্ষ্য ছিল অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক গেটওয়ে হিসেবে গড়ে তোলা।

এ ছাড়া পৃথক রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট রানওয়েকে ১০ হাজার ৭০০ ফুটে উন্নীত করার কাজ চলছে, যা শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে।