খেয়াঘাটে অতিরিক্ত ভাড়ার টাকা আদায় করার জেরে নরসিংদীতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

আজ শনিবার সকালে সদর উপজেলার মাধবদী থানার চরাঞ্চলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরদীঘলদী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদ মিয়া এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক চাঁন মিয়া গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। 

এর আগে, গত ৩ ও ৪ নভেম্বর এই দুই পক্ষের আরও ২ দফা সংঘর্ষ হয়।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

ওসি জানান, আগে সংঘর্ষের জেরে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হলেও আজ ভোরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পুলিশ পৌঁছার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, চরদীঘলদী ইউনিয়নের জিরতরামপুরে খেয়াঘাটে ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা আদায় ও আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে স্থানীয় শহিদ মেম্বার ও চাঁন মিয়া গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। 

এ নিয়ে গত সোম ও মঙ্গলবার দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হওয়ার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

আজ শনিবার সকালে পুলিশ না থাকার সুযোগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে টেঁটাসহ দেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষের লোকজন। এতে টেঁটাবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়। 

আহতদের মধ্যে কয়েকজন নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। 
তবে, গ্রেপ্তারের ভয়ে অনেকে বিভিন্ন স্থানে গোপনে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

জানতে চাইলে যুবদল নেতা চাঁন মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খেয়াঘাটে ৬ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা আদায়ের প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।'
 
'বিএনপি নেতা শহিদ মিয়ার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার বাড়িতে হামলায় সরাসরি অংশ নিয়েছে। আমার দলের ৪ জন আহত হয়েছে, অন্তত ২০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি,' বলেন তিনি।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চরদিঘলদী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদ মেম্বার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ ভোরে চান মিয়া গ্রুপের লোকেরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের ৬-৭ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে এলাকা শান্ত আছে।'

যোগাযোগ করা হলে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মূলত খেয়াঘাটের ইজারা আদায়কে কেন্দ্র করে চাঁন মিয়া ও শহীদ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। প্রশাসন ইতিমধ্যে ইজারা বাতিল করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।'

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।