জকসু ভোটার তালিকায় অসঙ্গতি, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। রানিং শিক্ষার্থী হয়েও অনেকের নাম তালিকায় নেই, আবার কিছু বিভাগের মাস্টার্স শেষ করা শিক্ষার্থীদের নাম রয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তালিকা প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় ভোটাধিকার বঞ্চনার অভিযোগ। অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে তালিকার স্ক্রিনশট...
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। রানিং শিক্ষার্থী হয়েও অনেকের নাম তালিকায় নেই, আবার কিছু বিভাগের মাস্টার্স শেষ করা শিক্ষার্থীদের নাম রয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তালিকা প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় ভোটাধিকার বঞ্চনার অভিযোগ। অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে তালিকার স্ক্রিনশট শেয়ার করে জানান, তাদের নাম নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াসাল রাকিব বলেন, 'আমি মাস্টার্সের রানিং শিক্ষার্থী, আমার আরেকটা সেমিস্টার এখনো বাকি। তারপরও ভোটার তালিকায় আমার নাম নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম জকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে, আর এই নির্বাচনে ভোট দেওয়া সব রানিং শিক্ষার্থীর অধিকার। তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে এই তালিকা সংশোধনের আহ্বান জানাই।'
তিনি আরও বলেন, 'ভোটার তালিকা তৈরিতে যদি সঠিক একাডেমিক তথ্য নেওয়া হতো, তাহলে এমনটা হতো না। এখন মনে হচ্ছে, কিছু বিভাগ বা গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে নাম বাদ বা যুক্ত করা হয়েছে।'
নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী কিশোর আনজুম সাম্য বলেন, 'আমি অষ্টম সেমিস্টারের রানিং শিক্ষার্থী, এমনকি মিডটার্ম পরীক্ষা দিচ্ছি। তাহলে আমাকে কেন ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো? নির্বাচন কমিশনকে এর জবাব দিতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার ব্যাচের সবার নাম ভোটার তালিকায় আছে, শুধু আমার নেই। অন্যদিকে আমি জকসু নির্বাচনের একজন প্রার্থী। নির্বাচন শুরুর আগেই যদি এমনটা হয়, তাহলে পুরো কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়েই সন্দেহ তৈরি হয়।'
নাট্যকলা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তৌহিদ চৌধুরী বলেন, 'ভোটার তালিকা প্রকাশের পর দেখি সেখানে আমার নাম নেই। বিষয়টি আমি বিভাগে জানিয়েছি।'
অন্যদিকে, আইন বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নামও ভোটার তালিকায় এসেছে। অথচ তাদের মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হয়ে ফলও প্রকাশিত হয়েছে।
আইন বিভাগের ওই ব্যাচের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস শিমু বলেন, 'আমাদের ব্যাচের সবাইকে ভোটার তালিকায় রাখা হয়েছে। কিন্তু আমাদের মাস্টার্সের ফল সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে। আমার মতে জকসু নির্বাচনে কেবল রানিং শিক্ষার্থীদেরই ভোটার তালিকায় রাখা উচিত। এতে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।'
ভোটার তালিকার অসঙ্গতি বিষয়ে জানতে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে সহকারী নির্বাচন কমিশনার জুলফিকার মাহমুদ ফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে বিভাগগুলোতে নোটিশ পাঠিয়েছি। বিভাগগুলো থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোববারের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'অধিকাংশ বিভাগের মাস্টার্স ২০২২–২৩ সেশনের শিক্ষার্থী, যারা এখনো পাস করেননি, তাদের নাম খসড়া ভোটার তালিকায় আসেনি। এসব বিষয় সমাধান করা হবে।'
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন।