আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল ও প্রার্থীদের প্রচারণায় পোস্টার ব্যবহার করা যাবে না। পাশাপাশি ড্রোনও ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া থাকছে বিদেশে প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা।

সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় এসব বিধান যুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশন 'রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫' জারি করে।

দল ও প্রার্থীদের প্রচারণায় কী কী করা যাবে এবং কী কী করা যাবে না, তার উল্লেখ রয়েছে ইসি সচিবের সই করা এই বিধিমালায়। নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙলে প্রয়োজনে তদন্ত সাপেক্ষে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও রয়েছে এতে।

এ ছাড়া প্রার্থীর আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ জরিমানা এবং দলের জন্য দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশে জনসভা, পথসভা, সভা-সমাবেশ বা কোনো প্রচারণা করা যাবে না। নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোনো ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে পারবে। তবে ভোটার স্লিপে প্রার্থীর নাম, ছবি, পদের নাম ও প্রতীক উল্লেখ করতে পারবে না। 

সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্বর্তী/তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও যোগ করা হয়েছে। ফলে তারা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতে পারবেন না।

প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে; প্রচার সামগ্রীতে পলিথিন, রেকসিন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবলে রাখতে হবে।

আচরণবিধির 'গুরুতর' অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিওতে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে। আগে আচরণবিধিতে আরপিও অনুচ্ছেদটি ছিল না, এবার যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী অপরাধে আরপিও ৯১ ধারা অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিল করে থাকে ইসি। বিষয়টি আচরণ বিধিমালায় স্পষ্ট করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের সংলাপ ও সব প্রার্থীর এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণার সুযোগ রাখা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট আসনে সব প্রার্থীকে নিয়ে একদিনে তাদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্রগুলো পাঠ করার ব্যবস্থা করবেন।

প্রথমবারের মতো আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে এবার। দেশের ভেতরে তিন ধরনের ব্যক্তি ও প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাররা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন।

আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ ও আচরণবিধি জারির মধ্যে দিয়ে নির্বাচনী আইনের সব ধরনের সংস্কার কাজ শেষ হলো। এরইমধ্যে ভোটার তালিকা আইন সংশোধন, নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইন সংশোধন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন সংশোধন, ভোটকেন্দ্র নীতিমালা, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষণ নীতিমালা, সাংবাদিক নীতিমালাসহ সব ধরনের আইন-বিধি সংস্কার করেছে ইসি।