গাজীপুরে একটি অবৈধ কসাইখানা থেকে জবাইয়ের উদ্দেশ্যে আটকে রাখা ৩৭টি ঘোড়ার মধ্যে দুটির মৃত্যু হয়েছে। জীবিত বাকি ৩৫টি ঘোড়াকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। 'অভয়ারণ্য-বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন' নামে একটি প্রাণী কল্যাণ সংস্থা সেগুলোর তত্ত্বাবধান করছে।

গত ৪ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, র‍্যাব-১ ও পুলিশ যৌথভাবে হায়দরাবাদ এলাকায় ওই অভিযান চালায়। ওই এলাকায় শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি এক বছর ধরে অবৈধভাবে ঘোড়ার মাংস বিক্রি করছিলেন। ঘোড়ার মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও তিনি এই ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। অভিযানের সময় শফিকুল ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যান।

অভিযান পরিচালনাকারী গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, 'ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। এর আগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তিনবার জরিমানা করা হয়েছিল, তবুও তিনি এ কাজ বন্ধ করেননি। এবার বড় পরিসরে অভিযান চালানো হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এমন অভিযান চলবে।'

অভিযানের পরদিন উদ্ধার করা ৩৭টি জীবিত ঘোড়া ও জবাই করা মাংস গাজীপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রাণী কল্যাণ প্রতিষ্ঠান 'অভয়ারণ্য'-এর কর্মকর্তা রুবাইয়া আহমেদ বলেন, 'গাজীপুর জেলা প্রশাসকের অনুরোধে আমরা ঘোড়াগুলো গ্রহণ করি। একটি ছোট ও অস্বাস্থ্যকর জায়গায় ৩৫টি ঘোড়াকে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছিল। জবাই করা সাতটি ঘোড়ার মাংস চত্বরে ফেলে রাখা ছিল। দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল।'

তিনি আরও জানান, বেঁচে থাকা ঘোড়াগুলোর মধ্যে অনেকগুলো পোকায় আক্রান্ত ছিল, কিছু এতটাই দুর্বল যে দাঁড়াতে পারছিল না। কোনোটির দেহে পচা ক্ষত দেখা গেছে, একটির গর্ভপাতের উপক্রম হয়েছিল। রুবাইয়া বলেন, 'ঘোড়াগুলোকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের পায়ে এখনো শিকলের দাগ স্পষ্ট। জবাইয়ের জন্যই এগুলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছিল।'

'অভয়ারণ্য' জানায়, প্রায় ১২ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা শেষে ৩৫টি ঘোড়াকে জীবিত অবস্থায় চট্টগ্রামে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে পশুচিকিৎসকদের একটি দল সেগুলোর চিকিৎসা করছে।

গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নারগিস খানম বলেন, 'উদ্ধার হওয়া ঘোড়াগুলো বর্তমানে নিরাপদে আছে।'