আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিতর্কিত কোনো পুলিশ কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

বিগত তিন নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে এসে নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন করতে পুলিশ বদ্ধপরিকর বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) লাইনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে আইজিপি এসব কথা বলেন।

তার আগে তিনি আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য পুলিশের অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দেন।

আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। মানুষ নির্বাচনকে স্বাগত জানাচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও চাচ্ছে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক আছে। তাই কীভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া যায়, সে বিষয়ে পুলিশ নিজের ইচ্ছায় প্রশিক্ষিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে বাংলাদেশ পুলিশের কিছু সদস্য কোনো কারণে দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত হয়েছে বা ভুল করতে বাধ্য হয়েছে—তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে পুলিশ, যাতে অতীতের ভুলগুলো শুধরে নেওয়া যায়। একটি সফল নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য পুলিশ সদস্যরা উজ্জীবিত।

আইজিপি বলেন, গত তিনটি নির্বাচন নিয়ে নানান বিতর্ক আছে, সমালোচনা আছে। আমরা যেন সেইসব সমালোচনা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি। সমাজের সকল অংশের সহযোগিতায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে একটা সফল নির্বাচনে আমাদের ওপর যে দায়িত্ব এসেছে, আমরা তা ভালোভাবে পালন করব।

তিনি বলেন, আমি আমার ৩৫ বছরের পুলিশি জীবনে শুনিনি যে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশকে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা ও অপরাধ দমন করা—এগুলো আমাদের মৌলিক কাজ।

এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আমরা ক্রসফায়ার দিয়ে সন্ত্রাস দমন করতে চাই না। আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে চাই। অপরাধীকে আদালতে প্রেরণ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাই বর্তমান পুলিশের লক্ষ্য। সমাজের প্রতিটি মানুষ আমাদের শক্তি। পুলিশের শক্তি পুলিশের একার পক্ষে সব সমাধান করা সম্ভব নয়।

আগামী নির্বাচনে সাইবার সন্ত্রাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই জায়গায় আমরা দুর্বল। কিছু ব্যক্তি মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় এআই দিয়ে যা ইচ্ছা তাই ভাইরাল করছে। আমরা প্রথমে বিটিআরসিকে জানাই। বিটিআরসি ফেসবুকের মেটাকে জানায়। অনেক সময় ৪০ ভাগ সেগুলো অপসারিত করে মেটা। সবগুলো পরিত্যাজ্য করে না। এখানে পুলিশের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

বিগত দিনে নির্বাচনে বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তারা আগামী নির্বাচনে কি দায়িত্ব পালন করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবে না। বর্তমান সরকার চায় একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ সফল নির্বাচন। আমরা পুলিশও সেটি চাই। পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে চলবে। নির্বাচন কমিশনও যথেষ্ট আন্তরিক। আমাদের বিশ্বাস, আমরা সফল হব।

এ সময় সিএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল করিমসহ খুলনা বিভাগের পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।