ঢাকা–১২ (তেজগাঁও), জামালপুর–২ (ইসলামপুর) ও সাতক্ষীরা–২ (সদর–দেবহাটা) আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছে দলটির নেতাকর্মীরা।

আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা–১২ আসনে আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ারকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে থেকে সমর্থকদের বিশাল মিছিল শুরু হয়। পরে বিজয় সরণি ঘুরে তেজগাঁও কলেজের সামনে শেষ হয়।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, হাতিরঝিল ও শেরে বাংলা নগর থানার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী এতে অংশ নেন।

সারা পথজুড়ে 'আনোয়ার ভাইকে চাই', 'প্রার্থী পরিবর্তন চাই', 'রাজপথের আনোয়ার ভাই'—এমন স্লোগানে এলাকা মুখর থাকে।

মিছিলে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, তেজগাঁওয়ের তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ারকে বাদ দিয়ে সাইফুল আলম নিরবকে মনোনয়ন দেওয়ায় তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

গত ৩ নভেম্বর মনোনয়ন ঘোষণার পর ৪ ও ৬ নভেম্বরসহ এটি ছিল তৃতীয় দফার বিক্ষোভ।
তারা বলেন, সিদ্ধান্ত না বদলানো হলে আন্দোলন আরও বড় হবে।

মিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন শেরে বাংলা নগর থানা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তোফায়েল আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল কাদের মুকুলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

আজ দুপুরে জামালপুরের ইসলামপুর থানা মোড় বটতলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, সুলতান মাহমুদ বাবুর মনোনয়ন বাতিল করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এএসএম আব্দুল হালিমকে প্রার্থী ঘোষণা করতে হবে। তাদের অভিযোগ, ওয়ান-ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়াকে সরানোর প্রচেষ্টায় বাবু সক্রিয় ছিলেন এবং বর্তমানে বয়সজনিত কারণে তিনি মাঠে সক্রিয় প্রচারণা চালাতে পারবেন না।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুল বলেন, 'এএসএম আব্দুল হালিম দীর্ঘদিন মানুষের পাশে আছেন। তাকে মনোনয়ন দিলে ধানের শীষ জয়ী হবে।'

বিক্ষোভ শেষে টায়ার জ্বালিয়ে প্রধান সড়ক অবরোধ করেন তারা এবং হুঁশিয়ারি দেন, মনোনয়ন পরিবর্তন না হলে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সাতক্ষীরা–২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন তাজকিন আহমেদ চিশতীর সমর্থকরা।
আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সংগীতা মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নিউমার্কেট জিরো পয়েন্টে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এতে আশাশুনি–সাতক্ষীরা, যশোর–সাতক্ষীরা ও খুলনা–সাতক্ষীরা মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।

বিক্ষোভ চলাকালে সমর্থকরা 'চিশতী ভাইকে চাই', 'অবৈধ মনোনয়ন মানি না'—স্লোগান দেন।

নারীরাও অবরোধে যোগ দেন। তাদের দাবি—বহিষ্কৃত জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও আলিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফের মনোনয়ন বাতিল করতে হবে। 

সমর্থকদের অভিযোগ, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২৫ এপ্রিলের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় রউফকে সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার ছাড়াই তাকে মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূলকে অসম্মান করা হয়েছে।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ বলেন, রউফের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের কোনো চিঠি তিনি পাননি।

তিনটি আসনেই নেতাকর্মীরা অভিযোগ তোলেন, তৃণমূলের মতামতকে অগ্রাহ্য করে প্রার্থী বাছাই করায় তারা ক্ষুব্ধ।

তারা দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্রের প্রতি আহ্বান জানান, অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।