বালু ব্যবসার দ্বন্দ্বে হত্যা করা হয় রাউজানের ব্যবসায়ী হাকিমকে: পুলিশ
হাটহাজারীর মদুনাঘাটে প্রকাশ্যে গুলি করে রাউজানের ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম হত্যার নেপথ্যে রয়েছে বালু ব্যবসার দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্ব থেকেই ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে হাকিমকে খুন করানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্ত আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।এর আগে সোমবার ভোররাতে রাউজানের নোয়াপাড়ার আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির পুকুরে অভিযান চালিয়ে বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও চাইনিজ রাইফেলসহ বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিট। সেই সময়দুইজনকে গ্রেপ্ত...
হাটহাজারীর মদুনাঘাটে প্রকাশ্যে গুলি করে রাউজানের ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম হত্যার নেপথ্যে রয়েছে বালু ব্যবসার দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্ব থেকেই ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে হাকিমকে খুন করানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্ত আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
এর আগে সোমবার ভোররাতে রাউজানের নোয়াপাড়ার আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির পুকুরে অভিযান চালিয়ে বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও চাইনিজ রাইফেলসহ বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিট। সেই সময়দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই অস্ত্র ব্যবহার করেই হাকিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত হাকিম হত্যায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে চারটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলভার, একটি চায়না রাইফেল, একটি শর্টগান, ৪৯ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ১৭ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ১৯ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, সাতটি ম্যাগাজিন, দুটি দেশি রামদা, একটি রকেট ফ্লেয়ার, ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২৫০ গ্রাম গাঁজা ও ৯৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
এসপি সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন, রাউজানে সন্ত্রাসীদের ছয় থেকে সাতটি গ্রুপ সক্রিয়। চট্টগ্রাম নগরে সম্প্রতি যে গ্রুপ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের সঙ্গে এদের সম্পর্ক পাইনি। তবে ওই গ্রুপের ভাড়াটে খুনির সঙ্গে রাউজানের অনেক হত্যাকাণ্ডের সম্পৃক্ততা রয়েছে। সেই কারণে আমরা চেষ্টা করছি তাদের আইনের আওতায় আনার। সন্ত্রাসীদের প্রতি আমাদের বার্তা থাকবে, তারা যদি আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরত যেতে চায়, সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু পরবর্তীতে আবার কোনো অপরাধ করলে পুলিশ বসে থাকবে না।
হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক বিরোধের কথা জানতে চাইলে এসপি বলেন, 'সব মানুষই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কেউ অপরাধ করলে সেটি ব্যক্তির, এটা রাজনীতির দায় নয়। আমরা সব বিষয় খতিয়ে দেখছি।'
'হাকিম হত্যায় ১৫ জনের একটি দল একসঙ্গে কাজ করেছে। তাদের মধ্যে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছে পাঁচজন। দুইজন বাইকে গাড়িকে অনুসরণ করেছে। জব্দ করা বিদেশি পিস্তলগুলো হত্যাকাণ্ডে সংগঠিত হয়েছে। তারা এতটাই প্রফেশনাল যে সবগুলো অস্ত্র লোডেড অবস্থায় থাকে।'
'রাউজানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাতটি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। বাকি নয়টি আলাদা। প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামি গ্রেপ্তার আছে।'
এক প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, 'টার্গেট কিলিং অনেক সময় চাইলেও বন্ধ করা যায় না। ঘটনার সময় পুলিশ কম থাকে। তাও প্রত্যেকটি ঘটনার পর আসামিকে শনাক্তের চেষ্টা করেছি। আমরা আরও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে এগুলো বন্ধ করতে চাই।'
জেলা পুলিশের তথ্যমতে, সোমবার উদ্ধার করা অস্ত্রের বাইরে গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৬৬০টি বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর সশস্ত্র একটি দল হাকিমকে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনায় তার স্ত্রী হাটহাজারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। হাকিম স্থানীয় এক বিএনপি নেতার অনুসারী বলে জানা গেছে।