পায়ে গভীর আঘাতজনিত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে ১৮ বছর বয়সী তাওসিফ রহমান সুমনের। ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হয়েছে এ তথ্য। তার গলায় শ্বাসরোধের চিহ্নও পাওয়া গেছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সিটিটিসি) গাজিউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তাওসিফ রাজশাহী মহানগর ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের সন্তান।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরীর ডাবতলা এলাকায় নিজ বাসায় হামলার ঘটনায় নিহত হন তাওসিফ। তার মা তাসমিন নাহার এবং একমাত্র সন্দেহভাজন লিমন মিয়া আহত হন।

তারা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রমেক)-এ চিকিৎসাধীন। লিমনকে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।

উপ-কমিশনার গাজিউর বলেন, 'পায়ে গভীর আঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণেই তাওসিফের মৃত্যু হয়েছে। তার গলায় শ্বাসরোধের চিহ্নও ছিল।'

প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হামলাকারী নিজেকে বিচারকের ভাই পরিচয় দিয়ে ওই অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকে তাসমিন নাহারের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয় এবং ওই ব্যক্তি ছুরি বের করলে তাসমিন নাহার নিজেকে একটি ঘরে আটকে ফেলেন।

হামলাকারী দরজা ভাঙার চেষ্টা করলে বেরিয়ে আসেন পাশে রুমে ঘুমিয়ে থাকা সুমন। এরপর সংঘর্ষ বাঁধে। এতে সন্দেহভাজন লিমন সুমনকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ আছে।

এ সময় বাড়ির গৃহকর্মী পরিস্থিতি দেখে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেরিয়ে গিয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন।

হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে থাকা লিমন দাবি করেন, তিনি পাঁচ বছর ধরে তাসমিন নাহারকে চিনতেন।

পুলিশ আরও নিশ্চিত করেছে, তাসমিন নাহার গত ৬ নভেম্বর সিলেটে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। লিমন টাকা দাবি ও পরিবারকে হুমকি দিচ্ছিলেন বলে সেই জিডিতে উল্লেখ করা হয়।

এ ঘটনায় বিচারক আব্দুর রহমান বাদি হয়ে রাজপাড়া থানায় মামলা করেছেন। 

এজাহার থেকে জানা যায়, বিকেল ৩.৪২টায় গানম্যান ও ড্রাইভারের কাছ থেকে বাসায় আক্রমণের খবর শোনেন বিচারক রহমান। এরপর ফ্ল্যাটের মালিকের কাছ থেকে জানতে পারেন, তার স্ত্রী ও সন্তান দুজনকেই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালে পৌঁছে সন্তান তাওসিফকে স্ট্রেচারে মৃত অবস্থায় দেখেন রাজশাহী মহানগর ও দায়রা জজ আদালতের এ বিচারক।