ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে পাল্টাপাল্টি হামলায় একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাতে এ হামলায় শিপন মিয়া (৩০) নামে একজন মারা যান।

এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণি শাহ মাজারসংলগ্ন বাজারের একটি হোটেলে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে স্থানীয় কুখ্যাত ডাকাত মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক ডাকাতের ছেলে শিপন মিয়া (৩০) আড্ডা দিচ্ছিলেন।

ওই সময় আচমকা একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াছিন (২০) ও নূর আলম (১৮) গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, অন্যিদেক সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

শিপন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে তার গ্রামের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। মনেক ডাকাতের নেতৃত্বে তারা গণি শাহ মাজারের কাছে তালতলায় স্থানীয় শিক্ষক এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে গিয়ে গুলি চালায়। এতে এমরান মাস্টার (৩৮) আহত হন।

তিনি ঢাকায় কর্মরত পুলিশের এক উপ-পুলিশ কমিশনারের ছোট ভাই এবং শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

পরে বিক্ষুব্ধরা থোল্লাকান্দি গ্রামে গিয়ে একাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়। রাতেই গুলিবিদ্ধ চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে শিপন মিয়া রবিবার ভোরে মারা যান বলে তার স্বজনরা নিশ্চিত করেছেন। গুলিবিদ্ধ হোটেল কর্মচারী ইয়াছিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে মনেক ডাকাতের সঙ্গে থোল্লাকান্দি গ্রামের মিষ্টারের ছেলে আরাফাতের গোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। শনিবার রাতে শিপনের ওপর হামলা চালায় আরাফাতের নেতৃত্বাধীন দল। আর এই আরাফাত থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেন মাস্টারের আত্মীয়। এজন্যই পরে মনেকের লোকজন এমরান মাস্টারের অফিসে হামলা চালায়।

খবর পেয়ে ঘটনার রাতে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক ও নবীনগর থানার ওসি শাহীনূর ইসলামের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পিয়াস বসাক বলেন, ‌ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে হামলার কারণ নিয়ে তিনি বিস্তারিত জানাতে চাননি।

এদিকে রাতভর গুলিবিনিময় ও ভাঙচুরের ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।